আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ৫)
আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ৪)
এবছর বইমেলায় একটি কবিতার বই বের করেছি। যা এবারে আমার প্রকাশিত একমাত্র গ্রন্থ। বইয়ের নাম- 'বেতাল টুয়েন্টি ফাইভ'। বইমেলা ছাড়াও রকমারি এবং পুস্তকবিডির অনলাইন বাজারে বইটি এই মুহূর্তে বেস্টসেলার বলে জেনেছি! বুদ্ধিমান পাঠক বইটার নাম দেখে আমার সস্তা চালাকি ধরে ফেলবেন। জি হ্যা। নামটি এসেছে 'বেতাল পঞ্চবিংশতি' গ্রন্থ থেকে। বেতাল পঞ্চবিংশতি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত প্রথম গ্রন্থ। মৌলিক রচনা বললে সম্ভবত ঠিক হবে না। অনুবাদ গ্রন্থই বলা চলে। ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাসাগর লল্লুলাল রচিত হিন্দি "বেতাল পচীসী" গ্রন্থের আলোকে এই গ্রন্থ রচনা করেন। আপাতদৃষ্টিতে অনুবাদ মনে হলেও তিনি হুবহু অনুবাদ না করে মূল গ্রন্থের আলোকে এটি রচনা করেন। তবে আমি শুধু নামটাই ধার করেছি। আমার কবিতায় রাজা বিক্রমাদিত্য এবং বেতাল নামক বিশেষ অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাণীর মধ্যে গল্প এবং যুক্তির খেলা চলেনি গোটা পঁচিশেক গল্পের মতোন। তবে বইয়ে কবিতার সংখ্যা পঁচিশ! এ বই আমি আমার সহধর্মিণী নিরুপমাকে উৎসর্গ করেছি। আমাদের প্রণয়োপাখ্যানের চতুর্দ্দশ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে তাকে এ বইটি উৎসর্গ করা। কিন্তু সামান্য একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। উৎসর্গ পাতায় লেখার কথা ছিল 'নিরুপমা, সুচরিতাসু' অথবা 'নিরুপমা, প্রেমপূর্ণীয়াষু' (এটা আমার বানানো, আধুনিক বাংলা পত্রলিখন রীতির কোথাও এই শব্দ নেই!)। পেশাদার মুদ্রলেখক ব্যাটা লিখেছেঃ
নিরুপমা, শ্রদ্ধাস্পদাসু
তাই দেখে নিরু ভীষণ রেগে গেছে। আর আমিও বেখেয়ালে উৎসর্গপত্রটা লক্ষ্যই করিনি। বইটা বের হবার কথা ছিল আমাদের 'অ্যানিভার্সারি' তথা ফেব্রুয়ারির আট তারিখে। কিন্তু প্রকাশকের জোরাজুরিতে তা বের করতে হয়েছে দুই তারিখে। তবে আট তারিখে বই মেলায় সবাইকে আসতে বলেছি। সেদিন আমি আর নিরু পরিবেশক সংস্থার স্টলে বসে থাকব বলে সবাইকে জানিয়েছি। কিন্তু নিরু বেঁকে বসেছে। কিছুতেই ও আর বইমেলায় যাবে না। আমাকে বলেছে আমি নাকি ইচ্ছা করেই শ্রদ্ধাস্পদাসু শব্দটা যোগ করেছি। আমি কীভাবে নিরুকে বোঝাব, এ আমার কসুর নয়! নিরু যদিও প্রুফ রিডিং-এ কিছু সাহায্য করেছে, তবুও ও সব কবিতাগুলো পড়ে দেখবার সময় পায়নি। ওর না পড়া কবিতাগুলো আমি ইচ্ছা করেই ওকে দিয়ে প্রুফ করিয়ে নেইনি। আমি চাইছিলাম বেচারা ছাপানো হার্ডকাভার বই হাতে নিয়েই বিশেষ কবিতাগুলো পড়বে! এ কবিতাগুলোর একটির নাম- 'অন্তর্যামী হে মোর'। এ কবিতা লেখার পটভূমি নিরুর সাথে কিঞ্চিৎ মনোমালিন্য নিয়ে। ফেইসবুকে কি একটা দেখে ওকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম মাত্র। কোন অভিযোগও করিনি। তাতেই নিরু আমার সেদিন রাতের 'মিল' বন্ধ ঘোষণা করল। তাই এই কবিতা লেখা। তাও আবার ক্ষুধা পেটে নিয়ে! ক'টা লাইন আপনাদেরও শোনাই-
ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও-এ প্রকাশিত সকল লেখা এবং মন্তব্যের দায় লেখক-ব্লগার ও মন্তব্যকারীর। কোন ব্লগপোস্ট এবং মন্তব্যের দায় কোন অবস্থায় 'ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও' কর্তৃপক্ষ বহন করবে না