২০১৬ সালে আরডিএস জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগীতা উপলক্ষে স্যুভেনির "বাগ্মী"-এর জন্য সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলাম জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্টসেল এর কাছে ।
সেটিই সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করার মাধ্যমে আমাদের এ ব্লগে আমার ব্লগ যাত্রা শুরু করছি । :)
:তান্ত্রিক থেকে আর্টসেল।অর্থাৎ আর্টসেলের শুরুটা কিভাবে??
লিংকন:এইটাতো অনেক আগের কথা।আসলে তান্ত্রিকের ব্যাপার আমরা ওইভাবে দেখি না।আর্টসেল এর লাইন আপ বলতে আমরা বুঝি-আমি,সাজু,এরশাদ,সেজানে।কিন্তু তান্ত্রিকে সাজুও ছিল না,সেজানেও ছিল না।তাই তান্ত্রিকের ব্যাপারটা আমি আর্টসেল এর হিস্ট্রিতে নিয়ে আসবো না।
So we can talk about the history of Artcell যেটার যাত্রা শুরু '৯৯ থেকে।তখন আমরা সাজুর বাসার ছাদে একটা প্র্যাকটিস প্যাড করি।তো ওইখানেই আমরা জ্যাম শুরু করি।তখন আমাদের ভাই ভালো গিটারও ছিল না,ইভেন কোনো স্পিকারও ছিল না।হাতে বানানো স্পিকার দিয়ে বাজাতাম।ড্রামসে একটা বাড়ি মারলে গিটারের আওয়াজ আর শোনা যেত না।আবার ছিল সাউন্ডপ্রুফ ছাড়া রুম,সিম্বলে যখন বাড়ি মারতো তখন চমকায়ে উঠতাম।তার উপর অনেক গরমও ছিল ছাদের রুম।এইভাবেই কষ্ট করতে করতে আমরা চেষ্টা করসি যতটুক আর কি পারা যায়।পরে সবার প্রেম-ভালোবাসা পেয়ে পেয়ে এই পর্যন্ত আসছি।
:মিউজিকে আসার প্রতি আপনার ইন্সপিরেশন কারা?
লিংকন:ওয়েল,একেকজনের একেক রকমের অনুপ্রেরণা আছে।যেমন,আমি আর সাজু ছোটবেলা থেকেই প্রচুর ডেথ মেটাল গান শুনতাম।গ্রাউলিং,স্ক্রিমিং এইসব।আবার এরশাদ যেমন বেশির ভাগ শুনতো পিংক ফ্লয়েড।ওর গান শোনার ব্যাপারটা ছিল অনেক হিস্ট্রি ঘেটে,আগের দিনের গান বেশি শুনতো।আমি আবার অতো বেশি পাস্টে যেতাম না,ক্যানিবাল কর্প্স,ডিমু বরগির,সোডম যাবতীয় ডেথ মেটাল শুনতাম,সাজুও শুনতো।আবার সেজানে শুনতো মেইনলি কুইন্স,পিংক ফ্লয়েড।কিন্তু এরশাদের মতো কেউ পিংক ফ্লয়েড শুনতাম না।আবার সেজানে ডেথ মেটাল শুনতো না।ও এক দিন বললো,ড্রিম থিয়েটার একটা ব্যান্ড আছে,শুইনা দেখ।হেব্বি জোস গায়।আমি তো আবার ডেথ মেটাল বেশি শুনতাম।গলায় সুর আছে এমন গান শুনলেই আমার মেজাজ খারাপ হইতো।পরবর্তীতে ও বুঝাইলো আমাদের।তো এই রকম একেক জনের একেক রকম চয়েজ ছিল।
এ রকম একেক জনের একেকটা চয়েজ আছে।কিন্তু সবার মধ্যে একটা কমন চয়েজ ছিল,সেটা হচ্ছে মেটালিকা।যে যাই শুনুক না শুনুক,মেটালকা ইজ কম্পোলসারি।
তো তখন আমরা দেখলাম মেটালিকার মধ্যে যেই অ্যাঙ্গার আছে,যেই রীফিং আছে,পাওয়ারফুল ভয়েস এন্ড এভ্রিথিং।আমরা শুরুই করেছিলাম মেটালিকা নিয়ে যে হ্যাঁ এইটার উপর ভিত্তি করে আমরা কাজ করব।তো এই ইচ্ছা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি।বলতে গেলে,উই আর বিগ ফ্যান অফ মেটালিকা।
:প্রথম দিকে দেখা যেত আন্ডারগ্রাউন্ড কন্সার্ট গুলোতে আপনারা মেটালিকা কভার দেয়াটাই প্রাধান্য দিতেন।পরে কিভাবে প্রোগ্রেসিভে আসা?
লিংকন:ওই যে,সেজানে আমাদের বললো ড্রিম থিয়েটার ব্যান্ডটা শোন।ওদের গানগুলো শোনা শুরু করলাম।অ্যালবাম গুলা শোনা শুরু করলাম।তখন থেকে ভাবলাম আমাদের মধ্যে মেটালিকার ধারা টাও থাকবে আবার প্রোগ্রেসিভের ব্যাপারটাও থাকবে।আবার চার জনের মধ্যে একেক ধরণের চয়েজ থাকে।চার জন মিলে আলোচনা করে,ঝগড়াঝাঁটি করে বাজায়ে শেষ পর্যন্ত যে সাউন্ড টা বের হয়,দ্যাট ইজ কল্ড দা সাউন্ড অফ আর্টসেল।তখন দেখলাম যে ব্যাপার টা আসলে প্রোগ্রেসিভ মেটালই হয়ে গিয়েছে।আমরা প্ল্যান করে করি নাই,আমরা এমন কিছু লরতে চেয়েছি যেটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে।য়ি ওয়ান্ট টু শো অফ উইথ আওয়ার মিউজিক।আমরা খালি গান গাবো না,আমরা সো অফ করব যে আমরা বাজাইতে পারি।এর জন্য আমরা ইচ্ছা মতো প্র্যাক্টিস করতাম।বাসায় বসে প্র্যাক্টিস করে তারপর প্যাডে গিয়ে সবাই এক সাথে বাজাতাম।
:এরশাদ ভাইয়া বলেন যে আপনাদের ব্যান্ডের শুরু টা আসলে ফ্রেন্ডশিপ থেকে
তো গান করার সময় আপনারা কোন জিনিস টা বেশি প্রাধান্য দেন-দর্শকের চাহিদা নাকি নিজেদের তৃপ্ততা?
আর একই সাথে আরেকটা প্রশ্ন করি।ধরুন,আজকে বাংলাদেশের মানুষ প্রোগ্রেসিভ শোনা থেকে সরে আসলো,তখন আর্টসেলও কি তার নিজস্ব ধারা থেকে সরে আসবে?
লিংকন:ওয়েল,ভালো প্রশ্ন।আমাদের ব্যান্ডের ব্যাপারটা আসলেই ফ্রেন্ডশিপ থেকে।আমি,সাজু,এরশাদ,সেজানে ছিলাম একই বয়সের।আমাদের মধ্যে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল।তো ওইখান থেকেই শুরু আমাদের।
আর আমাদের প্রথম অ্যালবাম বের করার সময় আমরা বেশ চিন্তিত ছিলাম,মানুষ আমাদের গান শুনবে কিনা।পরে দেখলাম,না তারা শুনছে।মেইনলি আর কি,আআমরা চার জন মিলে কিছু করলাম,আমাদের টার্গেট টা হচ্ছে মানুষকে যাতে জিনিস টা শোনাইতে পারি।ব্যাপারটা এই রকম ননা যে,মার্কেটে যেটা চলছে আমদের ওইটাই করতে হবে।বরং আমাদের কাছে যেটা ভালো লাগছে,মানুষ যাতে সেটা শুনে,সেই জিনিস টা দেখতে হবে আমাদের।শিল্পী হিসেবে আমার দায়িত্ব আমরা যে গান করছি,তা শোনার জন্য মানুষের কান তৈরি করা।যদি করতে পারি,তাহলে আমি সাক্সেসফুল।মার্কেটে এখন অনেক গানেরই ডিমান্ড থাকতে পারে,বাট এখান থেকে বের করতে হবে আমার ডিমান্ডটা কি,আমি কি চাই
মানুষ যদি প্রোগ্রেসিভ মেটাল থেকে সরে আসে,তবুও আর্টসেল তার ধারা তেই থাকবে।আর আমি পারসোনালি যেটা মনে করি,কোনো ব্যান্ডেরই কোনো জঁরা হিসেবে থাকা ঠিক না।যেমন,দুঃখ বিলাস গানটা তো প্রোগ্রেসিভ মেটাল না,আবার পথচলা প্রোগ্রেসিভ বাট মেটাল না।আমরা গাই বা বাজাই বা কম্পোজ করি,যেটা আমরা ভালোবাসি।তো মার্কেটে যদি কিছু চেইঞ্জও হয়,আমরা আমাদের মতোই কাজ করে যাব।যদি কিছু চেইঞ্জ হয়,তাহলে সেটা আমাদের চয়েজ।আমাদের বয়স বাড়ছে,ভিশন চেইঞ্জ হচ্ছে,আগে অনেক কিছু যেভাবে ভাবতাম,এখন সেভাবে ভাবি না।সো আমি।যেটা মনে করি,মার্কেটে চেইঞ্জ আসলেও আর্টসেল তার নিজের জায়গাতেই থাকবে।
:আপনাদের একটা প্ল্যান ছিল কাজী নজরুলের গান নিয়ে একটা অ্যালবাম বের করা।হঠাৎ করে প্ল্যানটা থেকে সরে আসলেন কেন??
লিংকন:ওয়েল,অনেক ব্যাপার আছে এখানে।আমাদের ব্যস্ততা,চাকরি-বাকরি,সাজু-সেজানের বাইরে যাওয়া ইত্যাদি।চার জন মানুষ যখন এক সাথে থাকে তখন একটা কাজ করা যায়।কিন্তু যদি এক সাথে না থাকি,তখন আর ওটা করে ওঠা সম্ভবপর হয় না।আর নজরুলের গান নিয়ে একটা অ্যালবাম বের করা অনেক কঠিন ব্যাপার।কারণ নজরুল সঙীত হচ্ছে অনেক কঠিন।যারা নজরুল সঙ্গীত গায় তাদের ব্যাপারস্যাপারই আলাদা।তো আমি অনেক খুঁজে বের করসি কোন গানে গলায় কাজ কম।এই রকম গান তুলতে পারব।পরে আর সময়ের অভাবে করতে পারিনি। তার উপর সেজানে আর সাজু দেশের বাইরে থাকার কারণে আর হয়ে উঠছে না।তাও ভবিষ্যতে একটা পরিকল্পপনা আছে।
:ইদানীং দেখছি বাংলাদেশে ব্যান্ডগুলা ভালো স্পন্সর পাচ্ছে।এই ব্যাপারটা ব্যান্ডগুলার ইকোনমিকাল পরিবর্তনে কি রকম ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন??
লিংকন:দ্যাট ডিপেন্ডস।যে কোম্পানি গুলা আসছে,সেই ককোম্পানি গুলার সাথে কিভাবে কি চুক্তি হছে,সেটার উপর নির্ভর করছে।চুক্তি কিন্তু একশো জনের সাথে একশো রকম হতে পারে।কোন চুক্তি টা তোমার ব্যান্ডের জন্য ভালো,ব্যান্ডের ফিউচারের জন্য ভালো সেই দিকটা লক্ষ্য রাখতে হবে। আর এখন আকাশ সংস্কৃতি এমন একটা পর্যায়ে গেল,যে সিদির মার্কেট এখন নাই।এখন সব হচ্ছে নেট বেইজড।ডাউনলোড আর অ্যাপ্স গুলার মাধ্যমে শোনা।এক দিক দদিয়ে ভালো যে গানের অ্যাভেইলঅ্যাভেইলিটি বাড়ছে।কিন্তু সিডি কালেকশন করার যযে হ্যাবিট,ওইটা চলে গিয়েছে।বিভিন্ন কোম্পানি গুলো যযে স্পন্সর করে,এটা খুবই ভালো।আমি মনে করি এএইটার থেকেও বড় হচ্ছে,আমাদের দেশে ব্যান্ড চর্চা প্রসারের জন্য একটা বিগ স্পন্সরশীপ ম্যনেজ করা।আমাদের দেশে ব্যান্ড মিউজিক চর্চার কোনো জায়গা নাই।দেশে শিল্পকলা একাডেমী আছে কিন্তু ওইখানে ব্যান্ড মিউজিক নিষিদ্ধ।এমন একটা জায়গা থাকা উচিৎ যেখানে সঠিক ভাবে ড্রামস শেখানো হবে,সঠিকভাবে গিটার শেখানো হবে,সব কিছু নিজ হাতে যাতে শিখতে পারে।অ্যাম্প কেন ব্যবহার করবে,টিউব অ্যাম্প মানে কি,ট্রাঞ্জিস্টার অ্যাম্প মানে কি,প্রোসেসর কিভাবে ব্যবহার করে এইসব কিছু যাতে জানতে পারে।পুরো জায়গাটাই থাকবে ব্যান্ড মিউজিকের জন্য।ওখানে সুন্দর অডিটোরিয়াম থাকবে,সব কিছুর সুব্যবস্থা থাকবে,নিয়মিত শো হবে,তিন-চার হাজার মানুষ শো দেখবে।সো স্পন্সর গুলো যদি ওভাবে হয় তাহলে আরেকটু বেটার হয়।এভাবে হয়তোবা আমাদের ব্যান্ড কালচার অনেক দূর আগায় যাবে।আমরা জানি যে ইন্সট্রুমেন্ট গুলার অনেক দাম।অনেক সময় এটা কিনা সম্ভব হয় না।যেমন আমি ছোটকালে একটা গিটার কিনার জন্য অনেক কান্নাকাটি করেছি।কিন্তু আমি পাই নাই। তখন গিটার ধরা মানেই ২৫-২৬ হাজার টাকা।অনেক কষ্ট করে,এরশাদের সাহায্য নিয়ে পরে পাইসি।এখন যা আছে সব আমার নিজেরই কিনা।ইন্সট্রুমেন্ট কিনার জন্য স্পন্সরশীপ খুবই প্রয়োজন।কারণ ভালো ইন্সট্রুমেন্টের অনেক দাম।সবার সামর্থ্যও থাকে না।সেখানে যদি একটা ছেলে স্পন্সরর পায়,নিঃসন্দেহে সে এগিয়ে যেতে পারবে।
:অনিকেত প্রান্তর গানটা নিয়ে যদি কিছু বলতেন।
লিংকন:অনিকেত প্রান্তর এর কন্সেপ্ট টা নিয়ে আসে আমাদের বন্ধু রুম্মান।অনিকেত প্রান্তর মানে হচ্ছে নো ম্যানস ল্যান্ড,অর্থাৎ দুটো দেশের মাঝখানে এমন একটা জায়গা যেখানে দুটো দেশেরই কোনো অধিকার নেই।দুটো দেশের মধ্যে নিয়মকানুন ভিন্ন থাকে,ভিন্ন ভিন্ন রেওয়াজ প্রচলিত থাকে।কিন্তু ওই দদেশ দুটোর মাঝখানের জায়গাটায় কোনো দেশেরই কোনো নিয়ম খাটেনা,ওইটাই হল অনিকেত প্রান্তর যেখানে কোনো নিয়মের অধীনে চলতে হবে না,কোনো দাস হয়ে থাকতে হবে না।এই কন্সেপ্টটা যদি একটা ছেলের মধ্যে চিন্তা করা যায়,তাহলে তার মধ্যেও এমন একটা বিষয় আছে যেখানে তার কোনো কিছু কাজ করে না,সেই জায়গা টাই হলো তার অনিকেত প্রান্তর।সেখানে সত্ত্বা,ধর্ম,কিচ্ছু প্রভাব ফেলে না।তুমি তোমার ধর্ম কে মেনে চলবা বা না চলবা সেটাও তোমার অধিকার।অর্থাৎ তুমি তোমার বিচার বুদ্ধি দিয়ে চলতে পারবা,এই কারণেই মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব আর সেটাই তোমার অনিকেত প্রান্তর।আমার যদি বিচার করার জ্ঞান থাকে,বিবেক থাকে,সেটাই হলো আমার ইন্ডিভিজুয়াল সত্ত্বা,যেটা অনন্য,যেটার আর কোনো মিল নাই,আর কোনো ডুপ্লিকেট নাই।তো তখন আমরা জিনিসটাকে এভাবে দেখলাম যে প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে একটা অনিকেত প্রান্তর কাজ করে
:এতো দীর্ঘ একটা গান করার সময় মাথায় ছিল না যে শ্রোতারা এটা নিবে কিনা?
লিংকন:আসলে গান করার সময় আমরা ঠিক করে রাখি না গান টা কত বড় হবে।করতে করতে বড় হয়ে গিয়েছে।আমরা কখনো জোর করে গান ছোটও করি না,জোর করে গান বড়ও করি না।আমরা কম্পোজ করতে থাকি,কম্পোজই আমাদেরকে নিয়ে যায়।যদি মনে কর যে আমরা টার্গেট করে বড় বানাইসি,সেটা একদমই ঠিক না।লিরিক্সটা আসলে ছিল ৪ পাতার।মনে হয়েছিল যেন উপন্যাস লিখেছে।এই নিয়ে অনেক ঝগড়াঝাঁটি হইসে,অনেক মজার কাহিনী আছে।পরে এটাকে অনেক ছোট বানানো হয়।এখন যে অনকেত প্রান্তর দেখছো সেটা মূল লিরিক্সের ৫ ভাগের ১ ভাগ মাত্র।লিরিক্সটা ছিল অনেক বড়,অনেক ইলাবোরেটেড লেখা।অনিকেত প্রান্তর নিয়ে লিখতে বসলে একটা আস্ত বই লেখা যাবে।তো সামনে আমাদেরযে অ্যালবাম আসবে,সেখানেও এই নিয়ে কিছু ব্যাপারস্যাপার থাকবে।
:দেশের বাইরে তো আপনারা অনেক কন্সার্ট করেছেন।তো তার মধ্যে কোনো একটা মজার ঘটনা যদি বলতেন………………
লিংকন:একবার কলকাতায় একটা ইউনিভারসিটি তে গিয়েছিলাম একটা শো করতে।তো ওই দিন একবারে মুষলধারায় বৃষ্টি।স্টেজ পর্যন্ত ভিজে গিয়েছে।মাঠে কাঁদা আর পানিতে একেবারে বিচ্ছিরি অবস্থা।আমি আবার শো এর সময় মাঝে মাঝে লিরিক্স ভুলে যাই।ওই দিন বৃষ্টির মধ্যেই শো করলাম।হাজারখানিক ইন্ডিয়ান ছেলে-মেয়ে কাঁদার মধ্যে দাঁড়িয়েই শো দেখলো।আমার সাথে গলা মিলিয়ে গান গাইল।ওইদিন ওদের মুখ নাড়ানো দেখেই আমার লিরিক্স মনে পড়েছে।
:বাংলাদেশে পাইরেসি জিনিসটা একটি গুরুতর সমস্যা।কিন্তু আপনারা বলেছিলেন যে আপনারা বিশ্বাস করেন আপনাদের ফ্যানরা একটা করে হলেও সিডি কিনবে।তো আপনাদের প্রত্যাশাটা কতটুক??
লিংকন:এর আগে যেটা হয়েছে আমাদের দুটো অ্যালবামই ভালোই সেল হয়েছে।সামনেও আমার প্রত্যাশা যে মানুষ সিডি কিনবে।কারণ সিডির ব্যাপারটাই আলাদা।
:লাস্ট অ্যালবাম বের হয়েছে দীর্ঘদিন আগে।স্বভাবতই এক্সপেকটেশন টা অনেক বেশি।আপনারা তাদের জন্য কি পরিকল্পনা করছেন?
লিংকন:ওয়েল,অ্যালবামটা বের হলেই বুঝতে পারবা।ইনফ্যাক্ট,অ্যালবাম ছেড়েই দিতাম।কিন্তু সম্প্রতি ফ্যানদের ট্রিবিউট গুলা দেখে আমাদের মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।তাই অ্যালবামের কাজ থামিয়ে পুরোনো একটা মিউজিক ভিডিও রি মাস্টার্ড করে ছাড়ার চিন্তা করলাম।কারণ ফ্যানরাই আমাদের সব।তাদের সন্তুষ্টিই আমাদের প্রথম কাজ
:ভাইয়া,আপনাদের চারজনকে এক সাথে কবে দেখছি??
লিংকন:সিউরলি বলতে পারছি না।তবে এই অ্যালবামের যে কন্সার্ট হবে,সেখানে তারা থাকবে।
:সাজু এবং সেজানে ভাইকে ছাড়া প্রথম কন্সার্ট এর অনুভূতি কি ছিল?
লিংকন:কষ্টদায়ক।সাজুর জায়গায় ড্রাম সেটে কেউ বসছে,এটা দেখলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যেত।আমার এক পাশে এরশাদ,আরেক পাশে সেজানে,পিছনে ড্রামসে সাজু-এই লাইন আপ ছাড়া স্টেজে উঠলেই মন খারাপ হয়ে যায়।
:ভাইয়া,ABC এর সময়টা নিয়ে যদি কিছু বলতেন…………
লিংকন:আসলে ওই সময়টা ছিল আমাদের দেশে ব্যান্ডের উত্থানের স্বর্ণযুগ।ওই সময়ে আমাদের মতো ব্যান্ডগুলোকে ওই সময়ের বড় বড় মিউজিসিয়ান রা যেভাবে সাহায্য করেছেন,সেটা অবিশ্বাশ্য।অর্থহীন এর সুমন ভাই,মাইলসের জুয়েল ভাই যেভাবে সাহাজ্য করেছেন,সেটা বলে বোঝানো যাবে না।কতদিন যে সুমন ভাইএর বাসায় রাত কাটাইসি,জুয়েল ভাই আমাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছে।
আর ABC এর মধ্যে ব্ল্যাকের তাহসান,ক্রিপ্টিক ফেইটের ফারহান সামাদ সেন্ট যোসেফে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল।স্টেজ শো এর সময় দেখা হত,কথা হত।বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গানের জন্য আমরা তাদের সাহায্য নিতাম,তারাও আমাদের কাছ থেকে সাজেশন নিত।
এরপর সাজু,সেজানে চলে যাওয়ার পরও আমরা জুনিয়রদের কাছে যে ধরণের সাহায্য পেয়েছি,সেটা এক কথায় অবিশ্বাস্য।আবির,জাহিন আর বিশেষ করে মেকানিক্সের রিয়াজের কথা না বললেই নয়।রিয়াজের জন্যঅই ড্রামসে সাজুর অভাব বেশ পূরণ হয়েছে।
:ইদানীং বাংলাদেশের আন্ডারগ্রাউন্ড মিউজিকে বেশ ভালো একটা পরিবর্তন এসেছে।নতুন মিউজিসিয়ানদের জন্য আপনি কি উপদেশ দিবেন?
লিংকন:একটাই কথা বলব।মিউজিককে বোঝার চেষ্টা কর।যাই বাজাও না কেন,সেটা মন থেকে বাজাবা।সব ধরণের গান শুনবা।নতুন থেকে শুরু করে পুরোনো সব গান শুনতে হবে।আর গার্জিয়ানদের বলব,আপনারা বাচ্চাদের সাপোর্ট দিবেন।
:একদম শেষ প্রশ্ন।আর্টসেল এর অ্যালবাম কবে পাচ্ছি?
লিংকন:এখন সময়ের ব্যাপার!
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঃ
মোসাদ্দেক মীম এবং আসিফ সাঈদ ,ডিবেটর -রেমিয়েন্স ডিবেটিং সোসাইটি ,ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ।
ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও-এ প্রকাশিত সকল লেখা এবং মন্তব্যের দায় লেখক-ব্লগার ও মন্তব্যকারীর। কোন ব্লগপোস্ট এবং মন্তব্যের দায় কোন অবস্থায় 'ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও' কর্তৃপক্ষ বহন করবে না
অর্বাচীন উজবুক
March 07, 2017 08:02 PM , ৬ বছর পূর্বে