আজ ৩১ জানুয়ারি, বুধবার, ২০১৮ইং "পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ" ঘটবে। সাথে আমরা একটি বিরল পূর্ণিমার সাক্ষী হতে চলেছি এই ধরণের পূর্ণিমাকে সাধারনত ইংরেজিতে Super Blue Blood Moon বা বাংলায় নীল-লোহিত পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ বলা যেতে পারে। সর্বশেষ Super Blue Blood Moon টি পৃথিবীর আকাশে দেখা গিয়েছিল ১৮৬৬ সালে। প্রায় ১৫২ বছর আগে। তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ধাপে - Super moon, Blue Moon, Total lunar eclipse ( পূর্ণ চন্দ্র গ্রহণ) -এই ঘটনাটি এক রাতেই আপনি আপনার বাড়ির ছাদ, ব্যাল্কনি বা যেকোনো জায়গা থেকেই উপভোগ করতে পারবেন।
পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণটির বিবরণঃ
✔ চন্দ্রগ্রহণ কেনো হয়, আমরা অনেকে জানি। সূর্যের চারিদিকে পৃথিবী ঘুরছে, আর পৃথিবীর চারিদিকে চাঁদ ঘুরছে, এই অবস্থায় সূর্য, পৃথিবী আর চাঁদ যখন একই সরলরেখায় চলে আছে তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর গিয়ে পড়ে। আর আমরা সকলেই জানি যে চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। চাঁদ আলো পায় সূর্যের আলো থেকে সুতরাং পৃথিবীর ছায়া চাঁদের গায়ে পড়লে চাঁদ অন্ধকারে ডেকে যায়। তখন আমরা সেটাকে চন্দ্রগ্রহণ বলি। চন্দ্রগ্রহণ সবসময় পূর্নিমা রাতেই হয়! কারন শুধুমাত্র পূর্ণিমা রাতেই চাঁদ পৃথিবীর বিপরীত পাশে থাকে বিধায় পৃথিবীর ছায়া চাঁদের গায়ে পড়ে চন্দ্রগ্রহণ সৃষ্টি হয়, তবে চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে প্রদক্ষিন করার সময় চাঁদের কক্ষপথ প্রায় ৫° হেলে থাকে। তাই প্রতি পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণ সৃষ্টি হয় না। বছরে ৩ থেকে ৫ টি চন্দ্রগ্রহণ সৃষ্টি হয়ে থাকে পূর্ণিমা রাতে।
✔✔ সুপার মুন উঠার খানিকবাদেই দেখা যাবে নীলাম্বরে নীলচন্দ্র অর্থাৎ Blue Moon. চন্দ্রমাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমাকে Blue Moon বলে। Blue Moon এর পরপরই শুরু হবে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ। এই সময় আমাদের পৃথিবীটি চাঁদ ও সূর্যের মাঝামাঝি চলে আসে। ফলে সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে বিক্ষেপিত হয়ে যখন চাদের উপর গিয়ে পরে তখন আলোর বিক্ষেপনের কারণে নীল আলো সরে গিয়ে চাদকে দেখতে প্রথমে কমলা ও পরে লাল রঙের লাগে। এশিয়া, উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সবচেয়ে সুন্দর ভাবে দেখা যাবে এই দূর্লভ Super Blue Blood Moon টি।
✔✔✔ যেহেতু ৩১ শে জানুয়ারিতে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হবে। সুতরাং সেদিন পূর্ণিমা হওয়া সত্বেও রাতের আকাশে কিছু সময়ের জন্য চাঁদ পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যাবে! এক রাতেই চাঁদকে দেখা যাবে কখনো নীল, কখনো লাল আবার কখনো চন্দ্রগ্রহনের স্বর্গীয় রূপে। বিষয় টি খুবই রোমাঞ্চকর, তাইনা? অন্যান্য পূর্ণিমার চাঁদের তুলনায় এই চাঁদটি প্রায় ১৪ শতাংশ বড় ও ৩০ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখা যাবে।
✔✔✔✔ শুধুমাত্র সূর্যগ্রহণ এর সময় স্থানভেদে সময়ের পার্থক্য হয়। কিন্তু চন্দ্রগ্রহণ একই সময় সকল এলাকা থেকে দেখা যায়। এখানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দেখা যাবার প্রশ্নই ওঠে না।
✔✔✔✔✔ চন্দ্রগ্রহণ এর সময় সকল স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যাবে ও সবাই খাবার খেতে পারবেন। চন্দ্রগ্রহণ সমন্ধে আমাদের দেশে প্রচলিত সকল প্রকার কুসংস্কার থেকে দুরে থাকুন। এগুলোর কোন বিজ্ঞান ও ইসলাম সম্মত ভিত্তি নেই।
☁ আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশে গ্রহণটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে সকল এলাকায় একই সাথে। Lunar Eclipse বা চন্দ্রগ্রহণ কিন্তু Solar Eclipse বা সূর্যগ্রহণ এর মত বিপদজনক নয়। এটি খালি চোখে দেখা যাবে। পারলে একটা বাইনুকুলার ও ক্যামেরা নিয়া দেখতে বইসেন। তাহলে হয়তো কয়েকটা দূর্লভ ছবি বা ভিডিও পাওয়া যেতেও পারে!
[তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত]
ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও-এ প্রকাশিত সকল লেখা এবং মন্তব্যের দায় লেখক-ব্লগার ও মন্তব্যকারীর। কোন ব্লগপোস্ট এবং মন্তব্যের দায় কোন অবস্থায় 'ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও' কর্তৃপক্ষ বহন করবে না